হাওজা নিউজ এজেন্সি: প্রয়াত নৈতিক শিক্ষক আয়াতুল্লাহ আজিজুল্লাহ খোশওয়াক্ত তাঁর এক নৈতিক পাঠে “জীবনে শান্তি ও সফলতার চাবিকাঠি” বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। ফেরেশতারা জান্নাতে জান্নাতবাসীদের উদ্দেশে বলবেন— ‘তোমরা ধৈর্য ধরেছিলে বলেই আজ তোমাদের প্রতি শান্তি ও নিরাপত্তা বর্ষিত হলো।’”
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “ধৈর্য হলো সব নেক কাজের ভিত্তি। ধৈর্য না থাকলে কেউ নামাজ পড়তে পারবে না, রোজা রাখতে পারবে না ভোরবেলায় ঘুম ভেঙে নামাজ পড়তে ওঠা ধৈর্যের দাবি করে, গরমের দিনে রোজা রাখা ধৈর্যের দাবি করে। আল্লাহর প্রতিটি আদেশ মানতে এবং সব নিষেধ মানতে ধৈর্য অপরিহার্য।”
আয়াতুল্লাহ খোশওয়াক্ত আরও বলেন, “ধৈর্য প্রথমে তিক্ত মনে হয়, কারণ মানুষ স্বভাবতই যা চায় তাই করতে ভালোবাসে। কিন্তু ধৈর্য শেখায়— ‘না, এখন নয়।’ এই ত্যাগ ও সংযমই আল্লাহর পক্ষ থেকে এক পরীক্ষা। অনেকে এই তিক্ততা সহ্য করতে না পেরে ভুল পথে চলে যায়।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যদি আমরা পাপ থেকে দূরে থাকতে চাই এবং জান্নাত লাভ করতে চাই, তবে ধৈর্য ছাড়া তা সম্ভব নয়। আল্লাহ বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ যদি অবিবাহিত থাকে, তাকে ধৈর্য ধরতে হবে; অন্যথায় পাপ থেকে বাঁচা কঠিন। আবার বিবাহিত জীবনে মতভেদ ও দ্বন্দ্ব আসতে পারে— তখনও ধৈর্য জরুরি। দাম্পত্য জীবনে অনেক সময় ঝগড়া, অভিমান, বা অভিযোগ দেখা দেয়। যদি ধৈর্য না থাকে, সংসার ভেঙে যেতে পারে, সন্তানরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর আল্লাহও সন্তুষ্ট থাকেন না।”
তিনি বলেন, “যার ধৈর্য কম, তাকে ধৈর্যের অনুশীলন করতে হবে। আর সেই অনুশীলনের উপায়ও হলো ধৈর্য নিজেই। আল্লাহর ফরজ আদেশ মানতে ধৈর্য লাগে, আর নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকতে আরও বেশি ধৈর্য প্রয়োজন। তাই প্রথমেই ফরজ কাজ থেকে শুরু করতে হবে। নিয়মিত চর্চা করলে দেখা যাবে— যে কাজ শুরুতে ভারী ও কঠিন মনে হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে তা সহজ হয়ে গেছে।”
আয়াতুল্লাহ খোশওয়াক্ত উপসংহারে বলেন, “যে কোনো কাজের ধারাবাহিকতা তাকে শক্তিশালী করে তোলে। ধৈর্যের অনুশীলনের মাধ্যমেই শুধু ধৈর্য নয়, বিশ্বাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নৈতিকতাও দৃঢ় হয়। আর এভাবেই মানুষ নিজের জীবনে প্রকৃত শান্তি ও সফলতা অর্জন করতে পারে।”
আপনার কমেন্ট